বেডরুমে সিলিং থেকে ঝুলছিল শিক্ষকের মরদেহ। হাত দুটি পেছন দিকে মোবাইলের হেডফোনের তার দিয়ে বাঁধা। ওই ঘরেই খাটের ওপর ছিল তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলের মরদেহ। তাদের পাশে পড়েছিল মোবাইল চার্জারের তার। পুলিশের ধারণা, আত্মঘাতী হওয়ার আগে ওই তার দিয়ে
স্ত্রী ও ছেলের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন ওই শিক্ষক। একই পরিবারের তিন সদস্যের এমন মৃত্যুর ঘটনায় ভারতের কোচবিহার শহরে গুঞ্জবাড়ি এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মরদেহের পাশ থেকে ১২ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার
করা হয়েছে।। তাতে লেখা হয়েছে, কীভাবে স্ত্রী ও সন্তানকে খুন করে নিজেকে শেষ করেছেন তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর, কোচবিহারে আদতে দিনহাটার গোসানিবাড়ির বাসিন্দা ছিলেন উৎপল বর্মন, ৩৮। তিনি কোচবিহারের এবিএন শীল কলেজে অস্থায়ী শিক্ষক পদে চাকরি
করতেন। শহরের গুঞ্জবাড়ি একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন উৎপল। সঙ্গে স্ত্রী অঞ্জনা ও একমাত্র ছেলে অদৃশ। পরিবারের সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ওই অস্থায়ী শিক্ষক। খুব তাড়াতাড়ি গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল উৎপল বর্মনের। গ্রামের পরিবারের সদস্যরা উৎপলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহার শহরে গুঞ্জবাড়ি
এলাকায় উৎপলের ভাড়া বাড়িতে আসেন। কিন্তু বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। বাইরে থেকে ডাকাডাকিও করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন উৎপলের স্বজনরা। তখনই দেখা যায় একটি ঘরে সিলিং ফ্যানে ঝুলছে উৎপলের দেহ। তার দুই হাত
হেডফোনের তার দিয়ে বাঁধা ছিল। পাশের ঘর থেকে উদ্ধার হয় স্ত্রী অঞ্জনা ও ছেলে অদৃশের দেহ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীত কুমার বলেন, ‘১২ পাতার সুইসাইড নোট মিলেছে। সুইসাইড নোটে প্রথমে স্ত্রী পুত্রকে খুন
করার কথা লেখা হয়েছে। তারপরে নিজে কীভাবে বারবার মরার চেষ্টা করেছেন, তা লিখেছেন। প্রাথমিক অনুমান খুন করে আত্মহত্যা। পরিবার খুনের অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’ – আনন্দবাজার পত্রিকা, এবিপি লাইভ