বিজয়ের বাংলা:
এবার ভারতে হিন্দুদের হু’মকিতে গ্রামছাড়া আরো ৪০ অসহায় মুসলিম পরিবার।
ভারতে মুসলমানরা কতটা নির্যাযিত৷ যুগ যুগ ধরে তারা কী পরিমাণ সহিংসতা এবং বর্বরতার শিকার হয়ে আসছে তা কারো অজানা নয়৷ গত ২-১-২০২১ আল-জাজিরার একটি প্র’তিবেদন থেকে বিষয়টি আরো পরিস্কার হয়ে গেছে।
রিপোর্টটিতে আলজাজিরা ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য টেলিগ্রাফ’–এর বরাত দিয়ে জানায় যে ভারতের উত্তরপ্রদেশে বসবাসরত প্রায় ৪০ টি মুসলিম পরিবার তাদের গ্রাম ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছে। হিন্দু
জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী দ্বারা হয়রানির শিকার হওয়ার পরে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে “মাভি মীরা” নামক ঐ গ্রামটিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে ভারতীয় ক’র্তৃপক্ষ কর্তৃক হিন্দু
এবং মুসলমানদের মধ্যে বিবাহকে অপরাধ সাব্যস্ত করে আইন জারি করার এক মাস পর৷রিপোর্টটিতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, হিন্দু জাতীয়তাবাদী কট্টরপন্হী “বজরঙ দল”এর একদল সদস্য গত ২৩ শে ডিসেম্বর গ্রামে একটি মুসলিম দোকানদারের
বাড়িতে গুলি চালিয়েছিল, বিনামূল্যে সিগারেট দিতে অস্বিকৃতি জানানোর কারণে৷ ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ এর বিবৃতিনুযায়ী দোকানটির মালিক এবং তার পরিবার এই হামলায় আহত হয়নি, তবে গ্রামের সংখ্যালঘু আনুমানিক ৬০০ মুসলিম পরিবার
তাত্ক্ষণিকভাবে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এবং তাদের বাড়িতে ব্যানার টানিয়ে লিখে রেখেছে “এই বাড়িটি বিক্রি করা হবে, আমরা এই গ্রাম ছেড়ে চলে যাবো।” পত্রিকাটি ঐ গ্রামেরই অধিবাসী “সরতাজ
আলম (২৫ ) ( যিনি ইতিমধ্যে এই সপ্তাহে তার পরিবার নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন) এর বরাত দিয়ে বলেছে যে, “আমি এবং আমার পরিবার গ্রামটিতে নিরাপদ বোধ করিনি৷
হিন্দু সম্প্রদায় আমাদের গ্রাম থেকে সরিয়ে দিতে চায়। তারা আমাদের উপর হামলা করে এবং দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে আসছে।” আরিফ মালিক (যে হামলার শিকার সেই দোকানদারের এক আত্মীয়) বলেন “আমাদের পরিবারগুলি ভারতের
বিভিন্ন অংশে কর্মরত থাকা করে স্বজনদের প্রত্যাবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে৷ তারা এলেই আমরা এখান থেকে হিজরতের জন্য একটি নিরাপদ জায়গায় চলে যাবো৷
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে গ্রামে মুসলিম সংখ্যালঘু সদস্যরা মুসলিম
দোকানদারের বাড়িতে গিয়ে গুলি চালানোর ঘটনাটি রেকর্ড করার জন্য স্থানীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছিলো৷ কিন্তু তারা বলে যে কিছু হিন্দু কর্মকর্তা তাদের অভিযোগ
প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে৷ তারা তা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার হুমকিও দি’য়েছেন। আল জাযিরা থেকে অনুবাদ: ইয়াহইয়া বিন আবু বকর নদভী।