বিজয়ের বাংলা হেলথ ডেস্ক:স্ট্রোক কি জন্য হয়? জেনে নিন এর প্রতিরোধের উপায়।
স্ট্রোক হলো ব্রেন বা মস্তিষ্কের রোগ। জনসচেতনতা যথাযথভাবে না থাকার কারণে দেশের বেশিরভাগ মানুষ স্ট্রো’ককে হার্টের রোগ মনে করেন। যার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা পেতেও দেরি হয়।এ বিষয়ে ন্যাশনাল ই’নস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি
বিভাগের অধ্যাপক ডা.এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন,রোগীর স্বজনরা স্ট্রোকে আ’ক্রান্ত রোগীকে নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে যান,
অথবা হার্টের কোনো হসপিটালে চলে যান। স্ট্রোককে হার্টের রোগ মনে করে অন্য কার্ডিওলজিস্ট অথবা হার্ট হসপিটালে চলে যান যার কারণে সেবা পেতে বিলম্ব হয়।
স্ট্রোক কি জন্য হয়?
অধ্যাপক ডা.এম.এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক একটি মস্তিষ্কের রোগ ও এটা হলো আমাদের মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলোর জটিলতার কারণে এই রোগ হয়। রক্তনালীতে কখনো র’ক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয় এবং ব্রেইনের একটা অংশের
সক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার পরে আমাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। র’ক্তনালীর কোনো অংশ কোনো কারণে ছিঁড়ে রক্তক্ষরণের কারণে ব্রেইনের একটি অংশ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ।
স্ট্রোক করেছে কীভাবে বুঝবেন?
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা সহজ ভাষায় বলি বি ফাস্ট। বি ফাস্ট এটা মনে রাখলে আ’পনারা সহজে আইডেন্টিফাই করতে পারবেন। বি মানে ব্যালেন্স। ব্যালেন্স মানে ভারসাম্য। যখন হঠাৎ করে ভারসাম্যহীন হবেন অথবা ই মানে আই।
অথবা হঠাৎ করে ব্লাইন্ডনেস হয় কেউ। এফ মানে ফেইস। ফেইসের একটি অংশ যদি এ্যাসিমেট্রি হয় অথবা একটা অংশ দুর্বল হয়। এ মানে আর্ম। আর্ম অথবা হাত যদি কখনো দুর্বল হয়ে যায় অথবা পা যদি দুর্বল হয়ে যায়। হ’ঠাৎ করে হয় তখন আমরা বলি স্ট্রোক হয়েছে। এস মানে
স্পিচ। হঠাৎ করে যদি কারোর কথা বলা বন্ধ হয়ে যায় অথবা স্লারিং অব স্পিচ অথবা জড়তা হয় কথায় হঠাৎ করে তখন সেটাকে আমরা বলি যে স্ট্রো’ক হয়েছে। টি মানে টাইম। টাইম ইজ ভেরি মাচ
ইমপর্টেন্ট। আমরা ৯৯৯ এ ফোন করি বা বাইরে ৯৯৯ এ ফোন করলে এম্বুলেন্স চলে আসে। টাইম ভেরি মাচ ইমপর্টেন্ট বিকজ কারণ আমরা অতি তা’ড়াতাড়ি ডক্টরের কাছে যেতে হবে অথবা হসপিটালে যেতে হবে।
স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক করণীয় কি?
অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক হলে এক মিনিটে বা বাইশ লক্ষ নিউরন মারা যায়, এজন্য আমরা বলি এ’ভরি সেকেন্ড ইজ ভেরি মাচ ইমপোর্টেন্ট ফর পেশেন্ট ( স্ট্রোকে আক্রান্ত
রোগীর প্রতিটি সেকেন্ডই গুরুত্বপূর্ণ)। এজন্য রোগীদেরকে অবশ্যই প্রতিটা সেকেন্ড যেহেতু আমাদের কাছে মূল্যবান। আমরা এজন্য কোন সময় ব্যয় না করে যখনি আমরা মনে করবো স্ট্রোক হয়েছে তখনি হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
হসপিটালে যাওয়ার ব্যবস্থা করবো। এছাড়াও অনেক সময় সিভিয়ার ভমিটিং নিয়ে আসে, সিভিয়ার হ্যাডএইক নিয়ে আসে এক্ষেত্রেও আমরা যদি সাডেন অকারেন্স হয় আমরা স্ট্রোক মনে করি আ’মরা হসপিটালে যাবো। এই ক্লিনিক্যাল ফিচারগুলি আমরা যদি পাই তখন আমরা বলি যে স্ট্রোক হয়েছে।
অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক
চৌধুরী বলেন, এই স্ট্রোক থেকে আমরা সাধারণত আরো দুইটা জিনিস বুঝি সেটা হলো- স্ট্রোক ইজ আ প্রিভেন্টেবল ডিজিজ এন্ড স্ট্রোক ইজ আ ট্রিটাবল ডিজিজ। স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ এবং স্ট্রোকের চিকিৎসা আছে। যথাসময়ে
স্ট্রোকের চিকিৎসা করলে রোগী ভালো হয়। তাহলে স্ট্রোক যেহেতু প্রতিরোধ করা যায়, প্রিভেন্টেবল করা যায় তাহলে আমাদেরকে ওই জিনিসগুলি লক্ষ্য রাখতে হবে যে স্ট্রোক কী কী করলে আমরা প্রিভেন্ট করতে পারি।
বাংলাদেশে স্ট্রোক প্রবণতা কেমন?অধ্যাপক ডা.এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, একবার স্ট্রোকের ২০১৭ সালে আমরা একটা সমীক্ষা করেছি, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসাইন্স এবং আমাদের স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর যৌথ উদ্যোগে। সেই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে আমাদের স্ট্রোকের প্রিভ্যালেন্স (প্রাদুর্ভাব) বাংলাদেশে অনেক বেশি। আমাদের এক হাজার জনের মধ্যে প্রায় ১২ জন স্ট্রোকের আক্রান্ত হন।
স্ট্রোকের পরবর্তী জীবনের বিভীষিকা:
অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক পঙ্গুত্বের এক নাম্বার কারণ। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও পঙ্গুত্বের এক নাম্বার কারণ স্ট্রো’ক। বাংলাদেশেও আমরা সমীক্ষায় দেখেছি পঙ্গুত্বের এক নাম্বার কারণ হলো স্ট্রোক। আমাদের