লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।

তিনি বলেছেন, এ সরকারের পতন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন আরও বেগবান করবো। বাধা-বিপত্তি যতই আসুক, আমাদের ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি। আমরা আন্দোলনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রস্তুত থাকার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানাচ্ছি।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কর্মসূচিতে আহত নেতাদের দেখতে এসে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম-আহবায়ক এডভোকেট হাছিবুর রহমান, জেলা যুবদলের আহবায়ক রেজাউল করিম লিটন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন- জাকির হোসেন (৩৪), জিয়াউদ্দিন মাহমুদ (৪০), নুর নবী (৩০), মাসুম উদ্দিন তুহিন (৪৩), আমজাদ ভূঁইয়া (৩৫), ইয়াসিন আরাফাত আরিফ (৩৫), আলমগীর হোসেন (৪৫), আব্দুল আহাদ (২৬), শাহাদাত মিঝি (৩০), ইসমাইল হোসেন (৩২), আব্দুর রহিম (৪৭), মো. ফাহাদ (২২), মো. ইসলাম (৩৮), এরশাদ হোসেনসহ (৩৩) ২৬ জন। এছাড়া অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

বিকেলে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের হামলায় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আকরাম হোসেন সাহেদ, ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ উল্যা রাজু, হেলাল উদ্দিন, আনেয়ার হোসেন, মো. আরজু, যুবদল নেতা দুলাল হাওলাদার ও মানিক হোসেন আহত হয় বলে জানা গেছে।

চর কাদিরা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আকরাম হোসেন সাহেদ বলেন, আমরা পদযাত্রা শেষ করে বক্তব্য দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এতে আমাদের ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ার হাটে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা হলেন চরকাদিরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল বাঙালি, আওয়ামী লীগ নেতা মহিব উল্যা শিপন, ছাত্রলীগ নেতা মো. শুভ ও মো. রকি।

কমলনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর বলেন, বিএনপির অতর্কিত হামলায় যুবলীগ নেতা সোহেল বাঙালিসহ আমাদের ৪জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ফজুমিয়ারহাট এলাকায় বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির একজন আটক আছে।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন (এমপি) বলেন, ৫৮ ইউনিয়নে আমাদের শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। এটি দেখে বিএনপি দিশেহারা হয়ে গেছে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই, তাদের কর্মসূচিতেও অংশ নেয়নি। এতে তারা নেতাকর্মীদের আহতের ঘটনায় হাসপাতাল ভর্তি করে আমাদের বিরুদ্ধে নালিশ করছে।