নির্বচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি সংলাপকে অর্থহীন মনে করছে বিএনপি। আজ শনিবার সকালে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পন ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে দলের
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন।ছাত্রদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রনেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানান এবং শপথ গ্রহণ করেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন
ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলে নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী বিএনপি প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন।নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এই সংলাপকে অর্থহীন মনে করছি।
আমরা মনে করি, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট, সে সংকট কোনো নির্বাচন কমিশন গঠনের সংকট নয় বা কোনো আইন তৈরি করারও সংকট নয়। প্রধান সংকট নির্বাচনকালীন সময়ে কোন ধরনের সরকার থাকবে। সেটাই প্রধান সংকট। যদি
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকে তাহলে সে নির্বাচনের কোনো মূল্যই হতে পারে না। অর্থ হতে পারে না। আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকার থাকতে হবে। যারা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তাদের
পরিচালনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।ফখরুল বলেন, ছাত্রদল একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রদের স্বার্থ নিয়ে আন্দোলন, অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন এবং সত্যিকার অর্থে একটি উদার
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য, শিক্ষা ব্যবস্থাকে গণমুখী করা ও উন্নয়নের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদীয় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
লড়াই করছেন। সেই সময় ছাত্রদলের নেতারা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শপথ নিয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার যে আন্দোলন চলমান রয়েছে
সেই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে এবং ২০২২ সালের সফল হবে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যে বন্দি করে রাখা হয়েছে বা তাদের কথায় সাজা দেওয়ার কথা বলে হয়েছে এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা
হয়েছে। তাকে যে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না সেটাও কোনো আইনি ব্যাপার না, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয়। শেখ হাসিনার তার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে এ ধরনের অবস্থা তৈরি করেছেন যাতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার
সুযোগ না পান এবং যে অসুখ তার হয়েছে তাতে যেন তিনি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যান। এটাই তারা চাচ্ছেন। তবে এর দায়-দায়িত্ব সমস্ত এই সরকারকে বহন করতে হবে। এর পরিণতি যদি খারাপ হয়, তারও দায়-দায়িত্ব তাদের বহন করতে হবে।
আমরা আন্দোলন করছি, সে আন্দোলন আরও বেগবান হবে। নিঃসন্দেহে সে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা হবে—বলেন ফখরুল।এ সময় তিনি দল, দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। ফখরুল আরও বলেন, আমরা আশা করছি এই নববর্ষে জনগণ মুক্ত হবে, গণতন্ত্র মুক্ত হবে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। দেশে অবশ্যই আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।