বিজয়ের বাংলা: রংপুরের পীরগাছা উপজেলার জগজীবন গ্রামে এবারেই প্রথম রোপণ করা হয়েছে বেগুনি রঙের নতুন ধান। এই ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। বেগুনি রঙের নতুন ধানের খেত দেখতে আগ্রহী মানুষেরা ভিড়ও করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের জগজীবন (গোবরাপাড়া) গ্রামে কৃষক ও স্থানীয় সার ব্যবসায়ী মোজাফফর আহমেদ মিন্টু তার এক বন্ধুর কাছ থেকে পরীক্ষামূলক চাষ করতে এক কেজি ধান নিয়ে চাষাবাদ করেন। শুরুতেই সবুজের মধ্যে ধূসর রঙের খেত দেখে অনেকেই মনে করতেন খেতটি অযত্নে মরে গেছে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধানগাছের পাতা গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করে। প্রতিদিন এই খেত দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করে। অনেক কৃষক আগামী মৌসুমে এই ধানের চাষ করতে কৃষক মিন্টুর সাথে যোগাযোগ করছেন। বৃহস্পতিবার(৩০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, রোদের প্রখরতায় বেগুনি রং আরও গাঢ় রং ধারণ করেছে।
ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষক ও সার ব্যবসায়ী মোজাফফর আহমেদ মিন্টু এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, নতুন এই ধান দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে। অনেক কৃষক এই ধানের চাষ করতে বীজও চেয়েছেন। এ ধান একর প্রতি প্রায় ৫০-৫৫ মণ উৎপাদন হবে। ধানগাছে শীষের সংখ্যা অনেক বেশি, অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।
এ ধানের ভাত খেলে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগের মতো আরও অনেক রোগ প্রতিরোধের ঝুঁকি কমায়। তিনি আরোও জানান, আমি পরীক্ষামূলক মাত্র দুই শতক জমিতে প্রথমবারের মতো এ ধান চাষ করেছি। জগজীবন ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হক এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, মিন্টু একজন কীটনাশক ব্যবসায়ী।
তিনি এই প্রথম আমাদের এলাকায় বেগুনি জাতের ধান রোপন করেছেন। তা দেখে আমার ভালো লাগছে। ওই বেগুনি ধানের খেত দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছে এবং ধানখেতে নেমে ছবিও তোলার চেষ্ঠা করছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, জগজীবন ব্লকে কৃষক মিন্টুর রোপণকৃত বেগুনি জাতের ধান আমরা সবসময় মনিটরিং করছি।
যদি এর ফল ভালো হয়, তা হলে আমরা অন্য কৃষকদের চাষাবাদ করতে উৎসাহিত করব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম জানান, বেগুনি জাতের ধান চাষ পীরগাছায় এই প্রথম এবং ধানের জাত পারপল লিফ রাইস। এ জাতের ধান নিয়ে গবেষনাগারে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
রংপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, এটা কোন অনুমোদিত ধানের জাত নয়। স্থানীয় কৃষকরা এটার বীজ সংগ্রহ করে বিচ্ছিন্নভাবে চাষাবাদ করছে।