নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় মৃত ব্যক্তি হামলা চালিয়ে ভেঙেছে নৌকা প্রার্থীর বাড়িঘর ও আসবাবপত্র। শুনলে কিছুটা অবিশ্বাস্য হলেও মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন গায়েবি অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হয়রানি করতে
থানায় দ্রুতবিচার আইনে মামলা দায়ের করেছে নৌকা প্রার্থীর ভাগ্নে শাহ আরেফিন রুমন।গত বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কেন্দুয়া উপজেলার ১২নং রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ
মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ নাজমুল হকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।এঘটনায় শুক্রবার রাতে শেখ নাজমুল হকের ভাগ্নে শাহ আরেফিন রুমন বাদী হয়ে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে কেন্দুয়া থানায় একটি
মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরো ১২০ জনকে।মামলার আসামিরা হলেন, একই ইউনিয়নের স্বতন্ত্রপ্রার্থী লুৎফর রহমান আকন্দের ছোট ভাই, চাচাতো ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও কর্মী-
সমর্থক এবং ইউনিয়নের ফতেপুর, কৈলাটি ও দ্বিগর গ্রামের বাসিন্দারা যারা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করছেমামলার ২৫নং আসামি করা হয়েছে ফতেপুর গ্রামের মৃত ইছব আলী ছেলে মো. রহিমকে (৫৪)। তিনি
গত ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট মারা যান।এ ছাড়া ৪৩নং আসামি একজন প্যারালাইজড রোগী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ২০নং আসামি বেশ কিছু দিন ধরে রংপুর এলাকায় অবস্থান
করছেন। এ ছাড়া ৪৭ ও ৪৮নং আসামি একই ব্যক্তি জানিয়েছেন গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান।প্যারালাইজড রোগী ও মৃত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য
সৃষ্টি হয়েছে।মামলার অভিযোগে বাদী আরটিভি নিউজকে বলেন, তিনি রোয়াইলবাড়ী আমতলা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ নাজমুল হকের আপন ভাগ্নে। তার মামাকে নৌকা প্রতীক দেয়ায় শত্রুতা পোষণ
করতে থাকে। এরই জের হিসেবে আমি ও মামা প্রচারণা কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই। এই সুযোগে এজহারে বর্ণিত ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা মতে ঘটনার সময় চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, লোহার হেমার, হকিস্টিক,
কিরিচ, ধারালো রামদাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।এ ছাড়া এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়েছে বসতঘরের দরজা,
জানালা, রঙিন টেলিভিশন, চেয়ার-টেবিল, স্টিলের আলমারিসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, যাতে আড়াই লাখ টাকা ক্ষতি হয়। দুই লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় আসামিরা।এঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী
চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফর রহমান আকন্দ জানান, প্যারালাইজড রোগী ও মৃত ব্যক্তি রাতের আঁধারে গিয়ে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালাবে দুনিয়ার কোন মানুষ বিশ্বাস করবে? আর তা কি সম্ভব।
তিনি ভোটে হেরে যাবেন এমন আশঙ্কা থেকে আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে উল্টো একটি মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দিয়ে মাঠ ও কেন্দ্র দখলের পায়তারা চালাচ্ছেন। আমি ও আমার সমর্থকরা যেন
নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা না করতে পারে তাই এই মিথ্যা মামলার আয়োজন।কেন্দুয়া থানা ওসি কাজী শাহনেওয়াজ আরটিভি নিউজকে বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মৃত ও রোগী ব্যক্তি বিষয়ে জানা যাবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।