ভারতের ত্রিপুরায় ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ রাজমিস্ত্রির আক্রমণে এক পুলিশ অফিসারসহ পাঁচজন খুন হয়েছেন। গতকাল মাঝরাতে ঘটা এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত ঘাতক প্রদীপ দেব রায়কে ইতোমধ্যে গ্রেফতারও করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। পেশায় রাজমিস্ত্রি ঘাতক প্রদীপ মানসিক
ভারসাম্যহীন বলেই অনুমান স্থানীয় পুলিশের।প্রদীপের প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল রাত ১২টা নাগাদ প্রদীপ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শাবল নিয়ে মারতে যান তার স্ত্রী মীনা পাল দেব রায়কে। মীনা গুরুতর আহত অবস্থায় কোনোমতে পালিয়ে বাঁচলেও বাঁচাতে পারেননি দুই সন্তানকে।
মীনা বের হওয়ার পরপরই নিজের দুই সন্তানকে খুন করে প্রদীপ। এরপরে প্রদীপ খুন করে পাশের ঘরে থাকা তার আপন ভাইকেও। মাঝরাতে আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশী কৃষ্ণ দাস (৫৪) এগিয়ে এলে তাতক্ষণিকভাবে শাবল চালিয়ে তাকেও খুন করে প্রদীপ। নিহত কৃষ্ণ দাসের ছেলে
সাংবাদিকদের জানান, আমার বাবাকে আঘাত করার পর অন্য প্রতিবেশীদের বাড়িতেও হামলা চালানোর চেষ্টা করে সে। হামলার খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিত মল্লিক। তিনি গাড়ি থেকে নামা মাত্র ঘাতক প্রদীপ
আকস্মিকভাবে তার পেটেও শাবল ঢুকিয়ে দেয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান অফিসার সত্যজিত। পরে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী এসে ঘাতক প্রদীপকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার (২৭ নভেম্বর) আদালতে পাঠানো হবে ঘাতক প্রদীপকে।
আর ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচটি মরদেহই পাঠানো হয়েছে মর্গে।এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গ্রামবাসী জানান, পেশায় রাজমিস্ত্রি প্রদীপ মানসিক ভারসাম্যহীন। তবে এতটা হিংস্র হয়ে উঠবে, সেটা তাঁরাও ভাবতে পারেননি। আর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব
হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তার ফেসবুকে লিখেছেন, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উন্মক্ত দুর্বৃত্তের হামলায় খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকের শহীদ হওয়ায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। নিষ্ঠাবান এই পুলিশ অফিসারসহ এ ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের আত্মার সদগতি কামনা করছি। পরিবার-পরিজনের প্রতি জানাই আমার গভীর সমবেদনা। ঈশ্বরের কাছে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।