রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল ডিকে কলেজ মাঠে মুখোমুখি হয় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও সোহেল রানা (এসআরএফসি) ফুটবল ক্লাবের প্রীতি ফুটবল
ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ম্যাচটি দেখতে ছুটে আসে কিশোর লোকমান (১২)। ম্যাচ শেষে বাড়ি ফেরার পর পরিবারের সদস্যরা শাসন করলে সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রোববার
(১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ওই কিশোরকে দেখতে আসেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি কিশোরের দাদির হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন এবং কিশোরের পড়াশোনার সকল দায়িত্ব
বহনের ঘোষণা দেন। জানা গেছে, রোববার রাত ১০ টার দিকে উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই বারসা গ্রামে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে। ওই কিশোর আব্দুল জব্বারের ছেলে। কিশোরের দাদি হাসিনা বেগম বলেন, ‘ব্যারিস্টার সুমনের খেলা দেখতে যাওয়ার
জন্য ২০০ টাকা চায় লোকমান। আমরা টাকা না দেওয়ায় লুকিয়ে চুরি করে ২০০ টাকা নিয়ে সে খেলা দেখতে যায়। পরে খেলা শেষে সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে ফিরলে আমি ও তার ফুপুরা বকাবকি করি। সে সবার অগোচরে
বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা তাকে দ্রুত ভ্যানে করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।’লোকমানের নানা খোরশেদ আলম বলেন, নাতিটা ব্যারিস্টার সুমনের
খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য টাকা চেয়েছিল। তার বাবা-মা টাকা দেয়নি। সে খেলা দেখার জন্য বাসা থেকে চুরি টাকা নিয়ে যায়। তাকে একারনে বকাবকি করা হলে সে বিষ খেয়েছে। সেটা
জানার পর আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন সে মোটামুটি শঙ্কামুক্ত। লোকমানের দুলাভাই মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে লোকমান ফুটবল খেলার ভক্ত। কোথাও খেলা হলে তাকে ধরে রাখা যায় না।’ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
মেডিকেল অফিসার সঞ্জিব কুমার রায় বলেন, ‘তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ভালো রয়েছে।’প্রসঙ্গত, খেলায় সিলেটের হবিগঞ্জ থেকে আসা ব্যারিস্টার
সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ফুটবল একাডেমি বনাম রানীশংকৈল কাশিপুর সোহেল রানা ফুটবল ক্লাবের হাইভোল্টেজ খেলায় সোহেল রানা ফুটবল ক্লাব ৩ -১ গোল করে সুমন ফুটবল
একাডেমিকে পরাজিত করে। রাণীশংকৈল সোহেল রানা ফুটবল ক্লাব জয়লাভ করে। খেলা দেখতে মাঠের চারপাশে প্রায় অর্ধলক্ষ দর্শক জমায়েত হয়। এ সময় দেখা যায় কলেজ ভবনের বারান্দায় ও ছাদে সহ টিনের চালে গাছের ডালে এবং মাঠের
চারপাশে অসংখ্য ফুটবল প্রেমী মানুষ এক সাথে জড়ো হয়। এতে মঠের চার পাশে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। খেলা শেষে দুই দলের মাঝে উপহার হিসেবে ট্রফি তুলে দেন প্রধান অতিথিরা।