বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বারবার বিতর্কের মুখে পড়েছেন। নানান সময় নানান সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। সাকিবকে নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। কখনো বলা হয় তিনি টেস্ট খেলতে চাননা, আবার কখনো বলা হয় তিনি টাকার জন্য খেলেন! অথচ
সাকিব কতটা স্যাক্রিফাইস করেছে সেটা একবারও ভক্তরা ভেবেছেন কি? স্ত্রী-সন্তানকে সাত সমুদ্র তের নদী ওপারে রেখে মাসের পর মাস একা থাকার কষ্ট, যখন ফ্যামিলির কাছে ফিরে যাওয়ার পর তার মেয়ে তাকে মামা বলে ডাকে, তখন একজন বাবার কেমন লাগতে পারে সেই কষ্ট
বুঝার চেষ্টা করেছেন কি কেউ? প্রশ্নটা সাকিবেরই।সম্প্রতি ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব প্রশ্ন করেন সাকিব। যদিও তিন জানিয়েছেন এসব নিয়ে ভাবেন না। সাকিবকে জিজ্ঞেস করা হয়, এই যে এতদিন পরে গিয়ে আবার অনেক দিনের জন্য চলে
আসেন, বাচ্চারা কীভাবে রিয়্যাক্ট করে? জবাবে সাকিব বলেন, বাকি দুইজন তো খুব ছোট, তবে অ্যালাইনার জন্য খুব কঠিন। ওর জন্য বেশি ঝামেলাটা হয়। ছোট দুইজন অনেক দিন থেকেই দেখছে আমি অন অ্যান্ড অফ, অন অ্যান্ড অফ। যেমন আমি যাওয়ার পর আমার ছোট
মেয়ে আমাকে ডাকছে ‘মামা’ ‘মামা’ করে। আপনি চিন্তা করেন, বাপকে যদি মামা-মামা বলে ডাকে তো কেমন লাগে! ও দেখেছে ওর বাপ টিভিতে, ভেবেছে ওর বাপ টিভিতেই আছে। যে আসছে, সে আরেকটা মামা। আসার তিন দিন আগে থেকে বাবা-বাবা ডাকা শুরু হয়েছে,
কিন্তু আমি চলে আসলাম। আবার যখন যাব; তখন চাচা, মামা, খালুও ডাকতে পারে। মানুষ ওগুলো অত বুঝবে না, যতক্ষণ না সে আমার জায়গায় আসবে। এ কারণে কে কী বলল, এটা নিয়ে আমি ভাবি না।নিজের স্যাক্রিফাসের কথা উল্লেখ করে সাকিব বলেন, মানুষ তো শুধু ভাবে আমি খেলতে চাই কি চাই না, কিংবা এরকম না হলে ওরকম হতো! কিন্তু আপনি এটা চিন্তা করেন তো আমি কত স্যাক্রিফাইস করছি।
এটা মানুষ দেখে না। কাউকে বলেন তো আমার মতো ফ্যামিলি ছাড়া এমন একা একা থাকতে-খেলতে; দেখি কয়জন সারসাইভ করতে পারে। আপনি আমাকে আর একটা প্লেয়ার দেখান তো এমন মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ফ্যামিলি ছাড়া খেলছে। বাংলাদেশ তো বাদই দিলাম, আপনি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটেই আর একটা এমন প্লেয়ার দেখান না! এটা আসলে হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা। বাবাকে মেয়ে মামা বলে ডাকছে। তবুও সাকিব বিচলিত নন শুধু আক্ষেপটা এটাই, যে নিজ দেশের থেকেই তাকে বারবার দেওয়া হয় ধিক্কার, মুখে পড়তে হয় কটূক্তির। তাই তো খোদ নিজেই বিশ্ব সেরা এই তারকা জনগণের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। প্রকাশ করে দিলেন ভেতরের আক্ষেপগুলো।