অর্ধেক সময়ে চলছিল পরীক্ষা। সবাই লেখায় ব্যস্ত থাকলেও সামনে খাতা নিয়ে বসে ছিলেন শামীম হোসেন। নেই কোনো মনোযোগ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করার চিন্তাও মাথায় নেই। খাতায় লেখার পরিবর্তে চোখ দিয়ে ঝরছিল পানি।বিজ্ঞান বিভাগ থেকে রাজশাহী শিক্ষা
বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন শামীম। মঙ্গলবার ছিল তার রসায়ন বিষয়ের পরীক্ষা। কিন্তু সোমবার রাতেই মারা যান তার ৫০ বছর বয়সী বাবা আব্দুল রশিদ। সব স্বপ্নই যেন চুরমার হয়ে গেল। নেমে এলো অন্ধকার। সারা রাত বাবার লাশের পাশেই ছিল একমাত্র
ছেলে শামীম।পরীক্ষার আগেই বাবাকে দাফন করা হয় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পরীক্ষার আগেই বাবাকে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত হন বাবা আব্দুল রশিদ। বাবার জানাজায় ছেলে যেন উপস্থিত থাকতে পারে, সে জন্য পরীক্ষার
আগেই জানাজা হয়েছে। দুই মেয়ে আর একমাত্র ছেলে নিয়ে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলছিল সংসার। দীর্ঘদিন ধরে শামীম হোসেনের বাবা মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছিলেন। সংসারের হাল ধরার মতো এখন তেমন কেউ নেই। পাশের গ্রামে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন বাবা। তার বাড়ি
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের চকমহব্বতপুর গ্রামে। এ ব্যাপারে মচমইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব, প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন খান বলেন, আমরা শামীম হোসেনের বিষয়টা শুনেছি। সত্যিই ঘটনাটি অনেক কষ্টের। তবে শামীম হোসেন যেন সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে পারে সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া হয়েছে।