সারাবিশ্বে যতো বড় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন তার মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তিনি সব সময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। সেসব সামনে রেখেই সকল খুটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের জাতীয়
কাউন্সিলস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগদান করবেন, সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মীরা অংশ নিবেন। এখানকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, ত্রুটি বিচ্যুতি আছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করতে আমরা এসেছি।
‘আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রীর সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। ইতোপূর্বে তার অনেকবার জীবন নাশের চেষ্টা হয়েছে, আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। এজন্য আমরা তার নিরাপত্তাটাকে সবসময়ই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে থাকি।’
তিনি বলেন, আগামীকালের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ফোর্স ডিপ্লয়মেন্ট করেছি। আমাদের এসবি-র্যাবসহ সকলে মিলে এই ভেন্যুতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। প্রত্যেকটা গেইটে আর্চওয়ে স্থাপন করা হবে, পুরো এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি।
এছাড়া, আমাদের ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে চারদিকে সুইপিং ও ম্যানুয়াল সুইপিং করা হবে। সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এক কথায় আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি যাতে আওয়ামী লীগ উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারে। আওয়ামী লীগের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দসহ প্রধানমন্ত্রীর যাতে কোন ধরনের নিরাপত্তার ত্রুটি না থাকে বিষয়টাই আজকে তদারকি করতে এসেছি।
নিরাপত্তায় থ্রেট রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা জানেন বিশ্বে যতো বড় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন তারমধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন সবচেয়ে বেশি রিস্কে। ৭১ এর পরাজিত শক্তিরা বার বার তার জীবন নাশের চেষ্টা করেছে। অনেকগুলো প্রমান আপনাদের কাছে আছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, টুঙ্গিপাড়ায় বোমা হামলাসহ আরো অনেক ঘটনা রয়েছে। সেগুলোকে সামনে রেখে আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধিকরাসহ সবগুলা খুটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছি। যাতে ওনার নিরাপত্তার কোন অসুবিধা না হয়।
দু্ই জঙ্গি ছিনতাই, নতুন জঙ্গি সংগঠনের উত্থান ও রাজনৈতিক উত্তাপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট কোন থ্রেট আছে বলে মনে করি না। জঙ্গি ২ জন ছিনতাই হয়েছে এ ব্যপারে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ওই জঙ্গিদের বেশ কয়েকয়েকজন সহযোগী এবং অন্য গ্রুপের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।
‘বাকি জঙ্গিদেরও আমরা নাম ঠিকানা সংগ্রহ করতে পেরেছি, তাদেরকেও গ্রেফতার করতে পারবো। তাই আশা করি জঙ্গিদের তরফ থেকে কোন থ্রেট থাকবে না। জঙ্গিরা যতোবারই মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে আমরা ততোবারই জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি, ভবিষ্যতেও সক্ষম হবো।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সামাজিক মাধ্যম মনিটরিং করার সিস্টেম আছে। আমাদের ডিবিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট, সিটিটিসিতে সাইবার ইউনিট আছে। অন্যান্য সংস্থারও সামাজিক মাধ্যম মনিটরিং করার সিস্টেম আছে। আমরা মনিটরিং করে যাচ্ছি। আশা করবো সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েও সমাজে কোন অস্থিরতা তৈরি করতে পারবে না।