তৃতীয় ধাপে ২৮শে নভেম্বর অবাধ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে রাজবাড়ী জেলার ২টি উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনী ৮ জন নৌকা প্রতীক, ১ জন বিনা প্রতিদ্বীতায় (নৌকা) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ৫ প্রার্থী চেয়ারম্যান হিসাবে বিজয় লাভ
করেছেন। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে গণনার পর রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাগণ ফলাফল ঘোষণা করেন। এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ৯ জন ও স্বতন্ত্র ৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।এদের মধ্যে জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী এ.বি এম রোকুজ্জামান ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্র মিলে ভোট পেয়েছেন মাত্র ২৭৫! বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে তিনি কোন ভোটই পাননি। এ নিয়ে বিস্তর গবেষনা চলছে তার নিজ ভোট কেন্দ্র নিয়েও। স্থানীয়রা
বলছেন অপাত্রে কণ্যাদানের প্রতিদান দিয়েছেন মদাপুর ইউনিয়নের মানুষ। তাদের বক্তব্য প্রার্থী বাছায়ে জনপ্রিয়তা দেখার দরকার ছিল। নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষনার পর দেখা গিয়েছে এমন চিত্র।নৌকার প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত বিষয়টি ভাবতেও অবাক লাগছে তার সাথে যারা
নির্বাচন করেছেন তাদের। বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে নৌকার প্রার্থীর সাথে মটর সাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা করতে, সেই সব ভোটাররাও তাকে ভোট দেননি। নির্বাচন শেষ হতেই ওই প্রার্থীর মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মদাপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের
বিদ্রোহী) প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান মজনু (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম মৃধা (আনারস) প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৪১৫ ভোট পান এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী এবিএম রোকনুজ্জামান ২৭৫ ভোট পেয়ে ন্যাক্কার জনক ভাবে পরাজিত হয়েছেন।কালুখালী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবার বিনা প্রতিদ্বনতায় নির্বাচিত হেয়েছেন (নৌকা) রতনদিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাচিনা পারভীন নিলুফা নৌকা প্রতীকে ১০ হাজার ৬৮৮ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম মন্ডল আনারস প্রতীকে ৬ হাজার ৭৪৯ ভোট পান।মদাপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ মিজানুর রহমান মজনু (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৯৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম মৃধা (আনারস) প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৪১৫ ভোট পান এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবিএম রোকনুজ্জামান ২৭৫ ভোট পেয়ে ন্যাক্কার জনক ভাবে পরাজিত হয়েছেন।মাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী শরিফুল ইসলাম (নৌকা) ৬ হাজার ৬৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ ইউসুফ হোসেন ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৪ ভোট। সাওরাইল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলাম আলী (নৌকা) ৮ হাজার ৭০০ ভোট পেয়ে
নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ গোলাম সরোয়ার ঠান্ডু ৭ হাজার ১১১ ভোট পেয়েছেন।মৃগী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী এম.এ মতিন (নৌকা) ৬ হাজার ৮৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সরদার হাসিবুল হক তুহিন (মোটর সাইকেল প্রতীক) নিয়ে ৫ হাজার ৭৬৫ ভোট পান। বোয়ালিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) প্রতীকে ৬ হাজার ৭৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মোছা.
হালিমা বেগম ৫ হাজার ৫৭৫ ভোট পান।নির্বাচন চলাকালে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন সুষ্ট পরিবেশে ভোট গ্রহণ হওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ নির্বাচনে তেমন কোন অপ্রতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে ফলাফল ঘোষনার পর কোখাও কোথাও কিছু বিচ্ছন্ন ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। জেলার মাজবাড়ী ইউনিয়নে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা ও বাড়ী ঘর ভাংচুর করার সংবাদ পাওয়া গেছে।