চুয়াডাঙ্গায় চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে লাফ দিয়ে বোরহান উদ্দিন (২১) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। গত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বোরহান উদ্দিন মেহেরপুর
সদর উপজেলার নবগঠিত বাড়াদি ইউনিয়নের নতুন দরবেশপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মিয়া-জানের ছেলে ও মেহেরপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।পরিবারের সদস্যরা জানায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে
পপি খাতুনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বোরহান উদ্দিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শনিবার দুই পরিবারের অগোচরে তারা বিয়ে করেন। এরপর বোরহান নববধূকে নিয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার সিংহাটি গ্রামে চাচাতো বোনের বাসায় গিয়ে ওঠে।ওই দিন রাতে বাড়িতে না আসায়
পরিবারের সদস্যরা বোরহানকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। রোববার রাতে বোরহানের বাবা মেহেরপুর জানতে পারে সে সদর উপজেলার সিংহাটি গ্রামে চাচাতো বোনের বাড়িতে আছে। পরে রাত ১০টার দিকে ওই বাড়িতে পৌঁছালে তাদের বিয়ের বিষয়টি পরিবারের সামনে আসে।বোরহানের মামাতো ভাই আলামিন বলেন,
ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে হবে জানিয়ে বোরহানের বাবা আমাকে বলে। পরে ওদের বাড়িতে পৌঁছালে রাত ১০টার দিকে আমি মোটরসাইকেলে এবং একটি মাইক্রোবাসযোগে তার বাবাসহ সেই চাচাতো বোনের বাড়িতে যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর বোরহানের বাবা তাদের বিয়ে মেনে না নিয়ে বোরহানকে নিয়ে চলে আসতে চায়।পরে দুই পরিবারের সদস্যরা বোরহানের বাবাকে বোঝালে তিনি বিয়েতে সম্মত জানিয়ে
ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। স্ত্রীকে রেখে একা বাড়িতে যাবে না বলে জানিয়ে দেয় বোরহান। পরে রাতেই মাইক্রোবাসযোগে নববধূকে নিয়ে নতুন দরবেশপুর গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। যাওয়ার পথে কুলপালা নামক স্থানে পৌঁছালে চলন্ত মাইক্রোবাসের জানালা থেকে
লাফ দেয় বোরহান। এ সময় সামনে থেকে আসা একটি ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয় সে।আরও বলেন, বোরহানের স্ত্রীর এর আগেও দুইবার বিয়ে হয়েছিল। এজন্য ছেলের বাবা প্রথমে মেনে নিতে না পারলেও পরে সবার অনুরোধে মেনে নিয়েছিল। মাইক্রোবাসে আসার সময় এই নিয়ে
ছেলেকে কটূক্তি করায় বাবার ওপর অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে বোরহান ছিল বড়। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, বোরহানের দুই পা ভেঙে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া আছে। হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।