বিজয়ের বাংলা:
নতুন শিক্ষাক্রমে বাদ দেওয়া হচ্ছে ধর্ম পরীক্ষা ইসলামি দলগুলোর ক্ষোভ।
বাংলাদেশে ২০২২ সালের জন্য সুপারিশকৃত নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম এবং নৈতিক শিক্ষার বিষয়ে পরীক্ষা বাদ
দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠন। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণীতে, শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির আলোকে।
সেইসাথে এসএসসিতে শুধুমাত্র পাঁচটি বিষয়ের ওপর খাতা-কলমে পরীক্ষা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ দশম শ্রেণিতে ১০টি বিষয় পড়ানো হলেও এসএসসি
পরীক্ষা হবে ৫টি বিষয়ের ওপর। সেগুলো হলো: বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান।অন্যদিকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা, জীবন এবং জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভালো থাকা, এবং শিল্প এবং সংস্কৃতি এই পাঁচটি বিষয়ে খাতা কলমে
কোন পরীক্ষা নেয়া হবে না।ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা বাদ দেয়াকে বাংলাদেশকে ধর্মহীন করার চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছে ওই ইসলামি সংগঠনগুলো। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে গণ
আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি করেছে তারা।শুক্রবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। যিনি চরমোনাই পীর নামে পরিচিত, তিনি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের শতকরা ৯০ থেকে ৯২ ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে
পড়ে। বাকি ৮ থেকে ১০ ভাগ শিক্ষার্থী পড়ে মাদ্রাসায়। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করে নতুন প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সরানোর পায়তারা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন তিনি।একই দাবি তুলেছে খেলাফত মজলিশ আরো কয়েকটি ইসলামি সংগঠন।
সরকার ধর্মীয় শিক্ষাকে পরীক্ষা সূচিতে অন্তর্ভুক্ত না করলে কঠিন আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।এ ব্যাপারে চরমোনাই পীরের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী শহীদুল ইসলাম কবির বলেন, ‘কোন বিষয়ে আপনারা কতোটুকু শিখলাম সেটা
তো মূল্যায়ন করা হয় পরীক্ষার মাধ্যমে। যদি পরীক্ষা না থাকে তাহলে তো শিক্ষার্থীরা ওই সাবজেক্টটা পড়বে না। তাছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাস ফেলের টার্গেট থাকে। যখন তাদেরও কোন জবাবদিহিতা নাই, তখন তারাও ধর্ম বিষয়টাকে পাশ কাটিয়ে যাবে। এটা তো
মুসলিম দেশে কোনভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না।’তবে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাসহ প্রতিটি বিষয়ে সামগ্রিক জ্ঞান দিতে সেইসাথে এসএসসি পরীক্ষা ৩২ কার্যদিবস থেকে কমিয়ে ৫
কার্যদিবসে নেয়ার লক্ষ্যে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দক্ষতা যাচাই করতে কাগজে কলমে পরীক্ষা নেয়া জরুরি। শুধুমাত্র সেই পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।অন্যদিকে, শিক্ষার্থীর আচার আচরণ, মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে যাচাই করা সম্ভব এমন
পাঁচটি বিষয় মূল্যায়ন হবে ধারাবাহিক পদ্ধতিতে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষকরা বাকি পাঁচটি বিষয় মূল্যায়ন করবেন। তাই কাগজে কলমে পরীক্ষা না হলেও কোন বিষয়কে কম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না বলে নিশ্চিত
করেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা।তিনি বলেন,‘পরীক্ষা না হলেই যে শিখবে না, এমনটা ঠিক না। ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা তো অনুশীলন ও
অনুধাবনের বিষয়। মুখস্থ করে পরীক্ষায়
কেউ লিখল কিন্তু হৃদয়ে ধারণ করলো না। তাহলে তো হবে না। এখন শিক্ষার্থীদের এই চর্চার বিষয়টি যেন সঠিকভাবে মূল্যায়িত হয়, আমরা সেটাতেই গুরুত্ব দিচ্ছি।’বাংলাদেশের চাহিদা নিরূপণ,