আজও দেশের অসাংবিধানিক শাসন, মোশতাক-জিয়ার চাপিয়ে দেওয়া পাকিস্তানপন্থি সরকার আনার অপরাজনীতি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
সোমবার (৭ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান স্মরণে জাসদ ঢাকা মহানগর কমিটি শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ইনু বলেন, সাত নভেম্বরের ঘটনায় কর্নেল তাহের মহানয়ক, জিয়া খলনায়ক। পাকিস্তানপন্থার সরকার আনার অপরাজনীতি রুখে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্র-প্রশাসন
ব্যবস্থার পরিবর্তন করে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামে অবিচল থাকতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা।
ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন—দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মু. আনোয়ার হোসেন, ফজলুর রহমান বাবুল,
বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, উম্মে হাসান ঝলমল, নাদের চৌধুরী, মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, মীর্জা মো. আনোয়ারুল হকসহ অনেকে।
কর্নেল তাহের বা জাসদ ক্ষমতা দখলের জন্য সিপাহীদের বিদ্রোহে যুক্ত হয়নি উল্লেখ করে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, কর্নেল তাহের ও জাসদ চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে যে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র, সংবিধান লঙ্ঘন-অবৈধ ক্ষমতা দখল-সামরিক শাসনের ধারা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই ধারার অবসান করা। তাই জাসদ বা কর্নেল তাহের নিজের হাতে ক্ষমতা না নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল।
কর্নেল তাহের ও সিপাহীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জিয়াকে মুক্ত করেছিল জানিয়ে ইনু বলেন, জিয়া মুক্ত হয়েই সিপাহীদের দাবি অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠনের পথে না গিয়ে নিজে ক্ষমতা
কুক্ষিগত করতে বিদ্রোহী সিপাহী ও কর্নেল তাহেরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। কর্নেল তাহেরসহ শত শত অফিসার, সৈনিককে হত্যা করেন। জাসদের নেতাদের কারাগারে নিক্ষেপ করে।
ও হত্যা-খুন-ষড়যন্ত্র-ক্যু-সংবিধান লঙ্ঘন-অবৈধ ক্ষমতা দখল-সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহীদের বিদ্রোহ বিশ্বের রাজনীতির ইতিাসে এক অনন্য মহান ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু যেমন খন্দকার মুশতাককে বিশ্বাস
করে ভুল করেছিলেন, কর্নেল তাহেরও জিয়াকে বিশ্বাস করে ভুল করেছিলেন। ইনু বলেন, আজ এটা প্রমাণিত হয়েছে ৭ নভেম্বর সিপাহী বিদ্রোহ ছিল সামরিক অফিসারদের উশৃঙ্খলার বিপরীতে সিপাহীদের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এক অনন্য ঘটনা।
আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পর থেকে পরাজিত পাকিস্তানি শক্তি রাষ্ট্রর অভ্যন্তরে এবং বাইরে ষড়যন্ত্র করেছে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামাত ও ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি
মাঠে নেমেছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী রাজনৈতিক শক্তির একটি শক্তিশালী, কার্যকর রাজনৈতিক ঐক্যই কেবল ষড়যন্ত্রকারীদের সকল চক্রান্তকে ব্যর্থ করে পুনরায় বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সরকার কায়েম করতে পারে।