ভূমিকম্পের আঘাত হানার নবম দিনে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার আরও ৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বর্তমানে উদ্ধার তৎপরতা গুটিয়ে এনে আহত ও উদ্বাস্তু মানুষের আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তার ওপর নজর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কেবল তুরস্কেই নিহত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৮ জন। এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি।
গত সপ্তাহে এই শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে তুরস্ক ও সিরিয়ার শহুরে এলাকাগুলোতে ধসে পড়ে শত শত বাড়ি। বর্তমানে সেসব এলাকায় বসবাসরত মানুষের দুর্দশা ও করুণ চিত্রসহ নানান খবর সামনে আসছে।
এবার একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া গেছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আল্টিনোজো বিভাগে। জানা গেছে, সেখানে ভূমিকম্পের প্রভাবে একটি গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমন তথ্য।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার সীমান্ত লাগোয়া তুরস্কের আল্টিনোজোর একটি বিস্তৃত জলপাই বাগানের মধ্যে ৯৮৪ ফুট লম্বা বিশাল বড় খাদের সৃষ্টি হয়। খাদটির ভেতরটি দেখতে অনেকটা ধূসর রঙের গিরিখাদের মতো। কোথাও কোথাও এটি প্রায় ১৩০ ফুট গভীর।
ভূমিকম্পের প্রভাবে সৃষ্ট এ খাদ প্রমাণ করছে গত সোমবার আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি কতটা শক্তিশালী ছিল।
ওই এলাকায় বাস করা ইরফান আকসু নামের এক ব্যক্তি তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেমিওরেনকে বলেছেন, ‘যখন ভূমিকম্প আঘাত হানে তখন সেখানে প্রচণ্ড জোরে শব্দ হচ্ছিল। যখন আমরা ঘুম থেকে জেগে ওঠি তখন মনে হয়েছিল যুদ্ধক্ষেত্রে আছি।’
তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, ওই এলাকায় যেন অনুসন্ধান চালানো হয়। কারণ তিনিসহ প্রায় ৭ হাজার মানুষ সেখানে বসবাস করেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ভীত। যদি খাদটি আরেকটি সামনে হতো, তাহলে এটি আমাদের শহরের মাঝে পড়ে যেত।’
এদিকে তুরস্ক ও সিরিয়ায় যে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে সেটি ২০২১ সালের পর পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ২০২১ সালে আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ দিকের স্যান্ডউইচ আইল্যান্ডে একটি ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। কিন্তু সেখানে জনবসতি না থাকায় মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি।