গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোট বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার আসনের উপনির্বাচন বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে কয়েকঘণ্টা ভোট না চলতেই ভোট কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরপরই নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরো ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান রিপন। তার দাবি, নির্বাচনে কোনো ঝামেলা হয়নি। অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে সব অসত্য।
তিনি বলেন, কোথাও কোনো ঝামেলা নেই। অবাধ এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সব অভিযোগ মিথ্যা বরং বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে নৌকার এজেন্টদের তাড়িয়ে দেয়া হয়।
কেন তাহলে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন এমন প্রশ্নে রিপন বলেন, ভোট বন্ধের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার রয়েছে। তবে কেন বা কী অভিযোগে এমনটা হলো, তা আমার জানা নেই।
বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে রিপন বলেন, কোনো বাস্তবসম্মত যৌক্তিক ছাড়াই নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে, যা সাধারণ ভোটারদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তার পরেও আমরা কমিশনের একতরফা সিদ্ধান্ত মেনে নেই।
‘দুপুর আড়াই দিকে নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করেই ভোট বন্ধ করে দেয়, যা ভোটারসহ এলাকাবাসীকে হতবাক ও মর্মাহত করেছে। তবে বৃহত্তর স্বার্থে আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করেছি।’
সব কেন্দ্রে ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে নৌকার প্রার্থী বলেন, যেসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে; সেসব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হোক। বাকি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট হোক।
নৌকার প্রার্থীর দাবি, তফসিল হওয়ার পর থেকে শান্তিপূর্ণভাবে সব প্রার্থী প্রচার চালিয়েছেন। সকাল থেকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট কেন্দ্রে আসতে থাকে ভোটাররা। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সংঘাতও ঘটেনি। তাছাড়া কেউ আটকও হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির উপর দোষ চাপিয়ে রিপন বলেন, আমি বা আমার নেতাকর্মীরা এমন কোনো কাজ করেনি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেছে। পুরো বিষয়টিই আমার কাছে রহস্যময়। এটা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। তারা আমার
নাম ছবি ব্যবহার করে টিশার্ট বানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন ভোটকেন্দ্রে নৈরাজ্য করেছে। পরিকল্পিতভাবে ভোটকে বাধাগ্রস্ত করতেই তারা এ কাজ করেছে বলে আমি মনে করি।
‘আমার কাছে পুরো বিষয়টিই রহস্যময়। আমি এর কোনো কুলকিনারা পাচ্ছি না। তবে এটা স্পষ্ট করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।’
ভোট চলাকালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়াও কূলা প্রতীকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম, আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও ট্রাক প্রতীকে আরেক নির্দলীয় প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর
রহমান ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তারা সবাই নির্বাচন বাতিল করে নতুন করে ভোট নেয়ার দাবি জানান। তবে এই ঘটনাটি বাংলাদেশে বিরল, যেটি সত্যি করে দেখিয়েছে নির্বাচন কমিশন।