কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। মূলত পর্যটন এলাকায় এই কাণ্ড বলে জনমণে তা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পরিপ্রেক্ষিতে ধরপাকড় চালাচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩ আসামিকে ২ দিন করে
রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।এর আগে রোববার মূলহোতা ও প্রধান আসামি টর্নেডো আশিকুল ইসলাম আশিককে মাদারীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর থেকেই আলোচনায় তিনি। সবার মনে একটাই প্রশ্ন কে এই আশিক? এর উত্তর অনুসন্ধানে সামান্য প্রয়াস চালানো হলো-
তার ব্যাপারে কথা বলেছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর কক্সবাজারে দুই দিন আত্মগোপন ছিলেন আশিক। গ্রেপ্তার এড়াতে ভ্রু, দাড়ি ও গোফ কেটে ফেলেন তিনি। কারণ, তার দাড়ি-গোফওয়ালা ছবি সোশ্যাল
মিডিয়াসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বেশভুষা পরিবর্তন করে কক্সবাজার থেকে একটি বাসে ঢাকায় আসেন আশিক। পরে মাইক্রোবাস করে পটুয়াখালীতে আত্মীয়ের বাড়িতে
যাচ্ছিলেন। এসময় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে তার গতিবিধি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় র্যাব। এরপর মাদারীপুরের মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় তারা। একপর্যায়ে একটি বাস তল্লাশি করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আশিক
ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি ও সহযোগিরা ভুক্তভোগী এবং তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। এরপর লাবনী বিচ এলাকার রাস্তা থেকে ওই নারীকে সিএনজিতে করে তুলে নেয়। আশিক ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ ও জিয়া
গেস্ট ইন হোটেলে আটক রাখেন।টর্নেডো আশিক কক্সবাজারে পর্যটক এলাকায় একটি অপরাধী চক্রের মূলহোতা জানিয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজারে তার নিয়ন্ত্রণে ৩০ থেকে ৩৫ সদস্য কাজ করেন। তারা পর্যটন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।এর আগে আশিক অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে
গ্রেপ্তার হন। ২০১২ সাল থেকে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তিনি। তার নামে ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ১২টি মামলা চলছে। এরই মধ্যে পুলিশ তাকে পাঁচবার গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন তিনি কারাভোগ করেন।এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, আশিকের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদকসহ নানা অপরাধে ১৬টির বেশি মামলা রয়েছে। এর এক মামলায় গত ১ ডিসেম্বর জামিনে কারাগার থেকে বের হন তিনি।