সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না গ্যাসের সিলিন্ডার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বাজারে অভিযান চালিয়েও সেটার প্রমাণ মিলেছে। গত কয়েকদিন রাজধানীতে প্রতি সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে ভোক্তার
বাড়তি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি গুণতে হচ্ছে। ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন অপরাধ মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা আধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এলপিজি গ্যাসের মূল্য বিষয়ে এর উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় ভোক্তা আধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এ সভায় সভাপতিত্ব
করেন তিনি। সফিকুজ্জামান বলেন, আগে এ সেক্টরে খুব একটা সমস্যা হয়নি। এখন যত প্রয়োজন বাড়ছে তত সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান বিইআরসি’র (বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন) একটি ভূমিকা
রয়েছে। এসময় এলপিজি গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অভিযোগ করে, বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম বৃদ্ধি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, আমদানি খরচ বৃদ্ধি এবং জ্বালানি তেলের কারণে পরিবহন খরচ বাড়ার পরও সেসব বিষয় আমলে না নিয়ে বিইআরসি গ্যাসের
দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। যা প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এসময় সফিকুজ্জামান বলেন, তারপরও যখন সরকার দাম নির্ধারণ করে, সেটা মানতে হবে। ভোক্তারা নির্ধারিত দামে না পেলে সেটা প্রতারণা হবে। আপনাদের সমস্যাগুলো দাম নির্ধারণের পূর্বে কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে হবে। সেটা আপনারা
করতে পারছেন না এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি বলেন, আমি বিইআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসবো। তিনিই আমাকে এর আগে দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানের কথা বলেছিলেন। এখন সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে ডেভলপ করতে পারবো।
এসময় বেক্সিমকো গ্যাসের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মুনতাছির আলম বলেন, বারবার অনুরোধ করে বিইআরসি’র দাম নির্ধারণের সভায় জায়গা নিতে হয়েছে আমাদের। গত মাসে দাম নির্ধারণে আমরা
আগ্রহী ছিলাম না। কারণ মিটিংয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ না করে এলসি নিস্পত্তির রেট ১০২ টাকা ধরা হয়েছিল। যেখানে সে সময় ডলার রেট আরও অনেক বেশি ছিল। জিএমআই কোম্পানির চেয়ারম্যান
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ এলপিজি খাতে ৩২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। আমিও জীবনের শেষ সময়ে বড় বিনিয়োগ করে বসেছি এ খাতে। সেটা বড় ভুল। সরকার যেমন প্রয়োজনে রাতারাতি একদিনে ৪৮ টাকা
জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, আমরা সেটা করতে পারি না। শুধু লোকসান করি। অন্যদিকে ডিলার ও বিক্রেতাদের পক্ষ থেকে কয়েকজন বৈঠকে বলেন, অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফা কমিয়ে দিচ্ছে। এমনও হয়েছে, কোম্পানি এক মাসে তিন দফা মুনাফা
কমিয়েছে। সেজন্য তাদের লাভ থাকছে না। অন্যদিকে তারা বারবার সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে জরিমানার স্বীকার হচ্ছেন। যদিও দাম বৃদ্ধির পেছনে অপারেটররা দায়ী। এসময়
মহাপরিচালক বলেন, মূল্যবৃদ্ধি হলে অভিযান চলবেই। যদি আমরা ক্রেতাদের কাছে অভিযোগ পাই, গয়েন্দা সংস্থা তথ্য দেয় তবে অভিযান হবেই। কিন্তু সেটা সবসময় যৌক্তিকভাবে হবে। কখনো
এ খাতকে অরক্ষিত করা হবে না। এদিকে বৈঠকে বিইআরসি’র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত উপপরিচালক ফিরোজ উজ জামান বলেন, দাম নির্ধারণে কিছু দুর্বলতার কথা এসেছে। সেগুলো আমি বিইআরসি চেয়ারম্যানকে জানাবো।