ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের তিন কর্মীর কাছ থেকে নির্বাচনের ব্যয় হওয়ায় ২৫ লাখ টাকা আদায়ের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা উদ্ধার করতে না পারলে সিরিঞ্জ দিয়ে তাদের
রক্ত তুলে নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মামুনপুর গ্রামে এই হুমকির ঘটনাটি ঘটেছে। মামুনপুর গ্রামের মো. বদরুল ইসলামকে মোবাইলফোনে এমন হুমকি দিয়েছেন পরাজিত
চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদ। হারুনুর রশিদ দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খাগুরা গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে দোয়ারাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেছেন হুমকির শিকার মামুনপুর গ্রামে মো. বদরুল ইসলাম। জিডিতে উল্লেখ করা
হয়েছে, হুমকিদাতা উপজেলার খাগুরা গ্রামের হারুনুর রশিদ শুক্রবার বেলা ১১ টা ১২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে মামুনপুর গ্রামে মো. বদরুল ইসলামকে ফোন করেন। হারুনুর রশিদ মোবাইলে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘তোমার এত বড় সাহস তুমি নির্বাচনের দিন
জনৈক মশিউর রহমানের কাছে নৌকার হয়ে ভোট চাইছ’। তুমি, রফিক ও হাসান আলীর ছেলে জুয়েল তোমরা যারা নির্বাচনের সময় নৌকায় হয়ে ভোট চাইছ তোমাদের বেঁধে তোমাদের কাছ থেকে আমি ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করব। টাকা উদ্ধার করতে না পারলে সিরিজ দিয়া
তোমাদের রক্ত তুইল্লা নিমু।” রফিক ও জুয়েল মিয়ার বাড়ি একই ইউপির মিরপুর গ্রামে। হুমকির পরপরই বিষয় নৌকা প্রতীকে বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান বীর প্রতীক এম, এ. হালিম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল মিয়াকে অবগত করেন তিনি। এবং হুমকিদাতা চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার বিষয়টি নিশ্চিত করে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) দেব দুলাল ধর বলেন, “মোবাইল ফোনে টাকা আদায়, টাকা না পেলে রক্ত নেওয়ার হুমকির ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে। পুলিশ আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হুমকির ভয়েজরেকর্ড উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হুমকিদাতা পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদ হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বললেন, “বদরুল আমার আত্মীয়, সে আমার মামাতো ভাই। বিষয়টি আপোষে মিটমাট করার জন্য আলোচনা চলছে। আশা করি মিটমাট হয়ে যাবে। যদি মিটমাট না হয় তাহলে
আপনারা পরে দেখতে পারবেন।” তবে বদরুল ইসলাম বলেন, “আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, নিরাপত্তা চাই আমরা। শুক্রবার রাতে থানায় জিডি করে বাড়িতে যাওয়ার পথে রাতের অন্ধকারে জুয়েলকে একা পেয়ে কয়েক জন মিলে খুব মারধর করেছে। হুমকির বিষয়টি ইউপি
চেয়ারম্যান ও এমপি সাহেবকে জানিয়েছি। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদ। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর প্রতীক এম. এ. হালিম।