‘জীবনটাই দুঃখ-কষ্টের মধ্যে গেছে, মানষের জমিতে ঘর করে থাকছি; বর্ষার সময় মেঘবৃষ্টিতে ভিজছি। এমন একটি ঘরে ঈদ করতে পারাম কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবি নাই।‘ এই অনু’ভূতি মদনের অসহায় গৃহিণী আনোয়ারা বেগমের। আশ্রয়ণ
প্রকল্পের ঘর পাওয়া ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বলেন, ‘এখন জমিসহ পাকাঘর পাচ্ছি। এখন নিজের জমি আছে, ঘর আছে। পুকুর আছে, বাড়ির সামনে-পেছনে ফলের গাছ, সবজি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা আছে, মনের ইচ্ছায় সব কিছু করতে
পারাম। শেখ হাসিনার ঘর হাইয়া খুব খুশি আমরা। এই রমজানের দিনে শেখ হাসিনারে আল্লাহ ভালা করুক, এই ভালা ঘরে থাইকা এই দোয়াই করি।’ স্বামী একটি কাঠ মেইলে কাজ করেন। একসময় মদন বাজারে থাকতেন। সেখান থেকেও
এলাকার মানুষ তাকে উচ্ছেদ করে দেয়। স্বামীর কোনো সহায়-সম্পত্তি এবং মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। শেষ বয়সে এসে অবশেষে আনোয়ারার ঠাঁই পাচ্ছেন মদন উপজেলার সদর ইউনিয়নের মদন
দক্ষিণপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর আওতায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নির্মিত ঘরে। সেখানে তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করবেন। দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না’—প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নের
লক্ষ্যে গৃহহীন এবং ভূমিহীনদের মুখে হাসি ফোটাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পোচ্ছেন এমনই অনেক আনোয়ারা- জাহানারা, শারমিন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে মদন উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ
প্রকল্পের আওতায় নির্মিত তৃতীয় পর্যায়ের ঘর পাচ্ছে গৃহহীন এবং ভূমিহীন ৫০টি পরিবার। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় ধাপে নির্মিত ঘরগুলো উদ্বোধন করবেন। জমিসহ আধাপাকা ঘর দেখে তারা খুবই খুশি ভূমিহীন-গৃহহীন
পরিবারগুলো। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে মদন উপজেলায় প্রথম ধাপে ৫৬টি পরিবার এবং দ্বিতীয় ধাপে ১০৫টি পরিবার এবং তৃতীয় ধাপে ৫০ ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত হয়েছে আধাপা০কা টিনের
ঘর। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকারি খাসজমিতে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ঈদ উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার এসব ঘর উদ্বোধন করবেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল
জানান, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমি দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। নির্মিত ঘরগুলো বাথরুম গোসলখানা, বারান্দাসহ দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি আধা-পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় দুই লাখ ৫৯ হাজার টাকা। উপজেলা নির্বাহী
অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, তৃতীয় ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ৫০টি ঘর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঘরগুলো উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন শেষে আমরা উপকারভোগীদের জমির কবুলত রেজিঃসহ নির্মিত ঘরগুলো হস্তান্তর করব।